শেখ মাহতাব হোসেন (ডুমুরিয়া) খুলনা:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি এক দিন। নির্বাচনে খুলনা-৫ ডুমুরিয়া-ফুলতলা আসনে মোট ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বিন্দতা করলেও মূলত লড়াই হবে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের মধ্যে। নিরুত্তাপ নির্বাচনে আকষ্মিক মাঠ গরম করেছে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা। শেষ পর্যন্ত দু’ প্রতীকের পোষ্টার ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো নির্বাচনী এলাকা। চারিদিকে যেন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
আসনটিতে ওয়ার্কস পার্টির প্রার্থী শেখ সেলিম আকতার স্বপন বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। এছাড়া জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের ঈগল প্রতীকের পক্ষে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ডাঃ আশরাফ হোসেন বলছিলেন, প্রথম থেকেই প্রচার-প্রচারনায় নৌকা ও ঈগল সমান সমান। আসন্ন নির্বাচনে ঠিক কে জিতবেন, তা রীতিমত মুশকিল। তবে এক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতের ভোটারদের উপর অনেকটা জয়-পরাজয় নির্ভর করছে বলে মনে করেন তিনি।
আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ও চারবারের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ নৌকা প্রতকে নির্বাচন করছেন।অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন, ফুলতলা উপজেলা পরিষদের ৪ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ফুলতলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আকরাম হোসেন ঈগল প্রতীক নিয়ে।
স্থানীয় ভোটারদের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব শেখ আকরাম হোসেন’র পাশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দেখা যাচ্ছে সমানে সমান।একই সঙ্গে তারা দু’জনেরই কর্মী সমর্থকরা বিএনপি বা অন্য দলের ভোটার-সমর্থকদের কাছে টানতে এবং তাদেরকে ভোট কেন্দ্রে আনতে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। মূলত তাদের ঠিক কি পরিমাণ ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং কাকে ভোট দিবেন খনিকটা তার উপরও নির্ভর করছে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়-পরাজয়ের বিষয়টি।
খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ হারুনুর রশীদ দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে ভোট নির্বাচিত করুন। এবার তিনি নির্বাচিত হলে আপনাদের সকল আশা পূরণ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
এ দিকে বুধবার বিকালে ফুলতলা এলাকায় আওয়ামীলীগ নেতা ও প্রবর্তন পত্রিকার সম্পাদক মোস্তফা সরোয়ার বলেন, নৌকার প্রার্থীর শাসন ও শোষন থেকে মুক্তি পেতে মানুষ বিকল্প হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেনর পক্ষে কাজ করছেন ।তবে নৌকার বিরুদ্ধে নয়, ব্যাক্তি নারায়ণ চন্দ্র চন্দর বিরুদ্ধে। এ দুই উপজেলা অধিকাংশ দলীয় হেভিওয়েট নেতাকর্মীরা ঈগল প্রতিকের পক্ষে কাজ করছেন। আমরা বছর বছর ধরে তার দু:শাষন থেকে মুক্তি পেতে রাস্তায় নেমেছি। এছাড়া নৌকার মিছিল-মিটিংয়ে কাজ করা বহু লোক রয়েছেন যারা ঈগল প্রতীকে ভোট দিবেন। আগামী ৭ ডিসেম্বর ভোটের মাধ্যমে ঈগল প্রতিককে বিজয়ী করে প্রমান করবে সাধারণ মানুষ কাকে চায়।
এ আসনে একবার জামায়াত বিএনপির প্রার্থী মিয়া গোলাম পরওয়ার নির্বাচিত হয়েছিলেন। এখানে দল দুইটির ভোট ব্যাংক রয়েছে। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, নৌকা ও ঈগল প্রতিকের কর্মী-সমর্থকরা বিএনপি-জামায়াতের ভোটারদের কাছে টানার পাশাপাশি তাদেরকে ভোট কেন্দ্রে আসতে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছেন। সেক্ষেত্রে নৌকা কিংবা যে কেউ নির্বাচিত হতে পারেন আসনটিতে। তবে ঠিক কে বিজয়ী হবেন তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৭ জানুয়ারী ভোট গণনা পর্যন্ত।