1. sheikhnadir81@gmail.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন

ডুমুরিয়ার পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা!

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০২২
  • ২১ বার পঠিত

শেখ মাহতাব হেসেন, ডুমুরিয়া (খুলনা)::

দীর্ঘ দিন সুনামের সাথে পরিচালিত খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আকষ্মিক ছন্দপতন হয়েছে। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি শুরু থেকে সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। তবে ক্রমান্বয়ে যেন ছন্দপতন ঘটেছে সামগ্রিক অবস্থার।

পর্যাপ্ত যায়গা থাকার পরও বিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত গেইটের সামনেই গোলের ঘর নির্মান করে গেইট বন্ধ ও সৌন্দর্য নষ্ট করা হয়েছে। খেলার মাঠের মধ্যে মাটির স্তুপ, বালি ও পাথর রেখে ছেলে-মেয়েদের সব ধরনের খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট করা হয়েছে। স্কুলের নামীয় জমির বাইরে অতিরিক্ত জমির দখল নিতে খালের উপর ভবন করায় হেলে পড়েছে নব নির্মিত ৪ তলা বিশিষ্ঠ ভবনটি। সূত্র জানায়, সুষ্ঠু রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে কয়েক বছরের মধ্যে নষ্ট হয়েছে বিদ্যালয়ের ১ তলা ভবনটি। অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার মানও ক্রমশ নি¤œমুখী হয়ে পড়েছে। ঠিক এমন অবস্থায় স্থানীয়রা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এত সব সমস্যার পরও বিদ্যালয়টিতে রয়েছে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ। অভিযোগে বলা হচ্ছে, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩টি শুণ্য পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ জন প্রার্থী পরিক্ষায় অংশগ্রহন করেন। এরমধ্যে পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে ৬ জনের মধ্য ভাইভা বোর্ডে নিজ ইউপি চেয়ারম্যানের নামসহ কোনো প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পারা এবং লিখিত পরীক্ষায় ৪ নম্বরে থাকা সনত মহালদার, নৈশ প্রহরী পদে ৪ জনের মধ্যে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির টিআর প্রতিনিধি প্রদিপ কুমারের আপন বোনের ছেলে ২য় নম্বরে থাকা ঝংকার সরদার ও অফিস সহায়ক পদে ৯ জনের মধ্যে প্রধান শিক্ষক প্রভাস বাবুর নিকটাতœীয় তারক চন্দ্র সরদারকে চুড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এব্যাপারে বিদ্যালয়েরর পরিচালনা পরিষদের তৎকালীণ অভিভাবক সদস্য নির্মল কান্তি মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ লক্ষ টাকার মত লেন-দেনের তথ্য প্রধান শিক্ষক স্বীকার করেছেন। তবে নিয়োগ সংক্রান্তে কোনো টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফান্ডে জমা না করে সমুদয় টাকা তিনি নিয়োগ খাতে ব্যায় করেছেন বলে দাবি করছেন। তিনি এর প্রতিবাদ করে এলাকাবাসীকে সম্পৃক্ত করে একটা মিটিং আহ্বানের প্রস্তাব দিলে তিনি উল্টো তাকে ধমক দিয়ে এটা নিয়ম বহির্ভূত বলে জানান।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিয়োগ খাতে ঠিক কত টাকা খরচ হয়েছে সেটা তার খেয়াল নেই বলে জানান।

সরেজমিন প্রতিবেদনে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সুজিত মন্ডলের বক্তব্যে কথোপকথনের একটি অডিও বার্তায় খরচের বিষয়টি স্পষ্ট।

বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়, ৩ টি পদের নিয়োগে প্রায় সাড়ে ১৮ লক্ষ টাকা গ্রহন করা হয়েছে। যেখানে পরিচ্ছনতা কর্মী পদে সনত মহালদার ৭ লক্ষ টাকা, নৈশ প্রহরী পদে ঝংকার সরদার ৮ লক্ষ টাকা এবং অফিস সহায়ক পদে তারক চন্দ্র সরদারের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করা হয়েছে। যেখানে সমুদয় টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েও তথ্য-উপাথ্য সংরক্ষিত রয়েছে।

যদিও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক এ সভাপতি সুজিত মন্ডল অডিও’র বিষয় অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগের ব্যাপারে তিনি কোন প্রকার অর্থ লেন-দেন করেননি। এছাড়া পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে মৌখিক পরীক্ষায় সনত মহালদার কোনো উত্তর দিতে পারলেও লিখিত পরীক্ষায় হয়তো ভালো করেছে বলে দাবি করে বলেন, সে অত্যন্ত সহজসরল সে কারণে মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডে খানিকটা ঘাবড়ে গিয়েছিল বলেও দাবি তার।

নিয়োগের ব্যাপারে শিক্ষক প্রতিনিধি প্রদিপ কুমার নৈশপ্রহরী ঝংকার তার ভাগ্নে বলে স্বীকার করে বলেন, সে অত্যন্ত দরিদ্র ও মেধাবী। পরীক্ষায় ভালো ফল করায় তার নৈশ প্রহরী পদে চাকুরি হয়েছে।

পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে নিয়োগ পাওয়া সনত মহালদারে কাছে তথ্য নিতে গেলে তার বড় ভাই সনজিত মহালদার সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচারন করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের দেখে চিল্লা-পাল্লা শুরু করেন।

সর্বশেষ সচেতন এলাকাবাসী ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

একই বিভাগের সকল খবর