প্রতিবেদক, তালা (সাতক্ষীরা)::
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জালালপুরের গৌতমকাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দেরিতে স্কুল খোলার অভিযোগ উঠেছে। ফলে সেখানকার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে আশংকায় আতংত তৈরি হয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে।
সম্প্রতি অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ (বুধবার) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে সরেজমিনে গৌতমকাটি স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল বন্ধ। শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে বন্ধ পেয়ে বিভিন্ন গাছ ও বিদ্যালয়ের গ্রীল ধরে ঝুলে ঝুলে সময় কাটাচ্ছে। এসময় তাদের কাছে স্কুল বন্ধের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা জানায়, স্যারেরা তাদের স্কুল প্রতিদিন দেরীতেই খোলেন। এরপর সেখানে অবস্থানকালীণ সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে স্কুলে এসে পৌছান সহকারী শিক্ষক গৌতম কুমার। এরপর ৯টা ৫৩ মিনিটে স্কুলে পৌছান প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম।
এসময় দেরীতে স্কুলে আসার কারণ জানতে চাইলে তরা বিভিন্ন অযুহাতে তালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে বলেন, বাজারে চা খেতে গিয়ে দেরী হয়ে গেছে তাদের। এসময় বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ঔদত্য দেখিয়ে বলেন, আপনারা পত্রিকার লিখে যা করার করেন।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৬ সালের দিকে বাছের মেমোরিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করে স্কুলের নামে ০.৩৩ একর জমি দান করেন দোহার গ্রামের মৃত বাছের সরদার। এরপর তার মৃত্যু হলে স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হন তার ছেলে আব্দুর রশীদ সরদার। তিনি তার স্ত্রী ফাইমা বেগমকে সেখানকার প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে স্কুলের কার্যক্রম পরিচাণা করেন।
অভিযোগ রয়েছে, ঐ সময় তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবে তালার সুজনসাহা, মাগুরা ও গৌতমকাটি এলাকার অন্তত ৪ জনকে নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন। পরবর্তী পর্যায়ে ২০১৩ সালের দিকে স্কুলটি জাতীয়করণ হলে সরকারিভাবে সেখানে শিক্ষক পদায়ন দিলে চাকুরী হারান অর্থের বিনিময়ে নিয়োগকৃত শিক্ষকরা। পরে সেসব টাকা আদায়ে ব্যাপক দৌড়-ঝাঁপ শুরু হলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
সূত্র জানায়, বর্তমানে স্কুলটিতে বিভিন্ন শ্রেণীর ৬০/৬২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এরমধ্যে প্রাক শ্রেণিতে ১৪ জন, প্রথম শ্রেণিতে ৯ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৯ জন, ৩য় শ্রেণিতে ১১ জন, ৪র্থ শ্রেণিতে ১২ জন ও ৫ম শ্রেণিতে ৭জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
এদিকে দীর্ঘ দিন ধরে স্কুলটিতে শিক্ষকরা দেরীতে আসায় সেখানে শিক্ষার্থী হ্রাসের পাশাপাশি সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এমনটি হলে বিকল্প চিন্তা করছেন কেউ কেউ।
এব্যাপারে তালা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার কর্মকার (ভারপ্রাপ্ত) জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।