1. sheikhnadir81@gmail.com : admin :
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
অপারেশনের নামে নিজেই রোগীদের হাত-পা কেটে পৈশাচিক আনন্দ পেতেন মিল্টন সমাদ্দার মুন্সীগঞ্জে টঙ্গীবাড়িতে অজ্ঞাত কিশোরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক দক্ষ ও যুগোপযোগী করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী খুলনাসহ ৮ বিভাগে কালবৈশাখী ঝড়ের সতর্কতা জারি খুলনায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা ডুমুরিয়ায় উচচ ফলনশীল পাট বীজ উৎপাদন, পাট চাষ ও পাট পচনের আধুনিক প্রদ্ধতির ক্রমোন্নয়নে কর্মশালা তালায় ১১৫ শিক্ষার্থীর মাঝে অর্থ বিতরণ মুন্সীগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের কর্মবিরতি সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’র বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

তালার কেএসডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫টি পদে পরীক্ষার আগেই নিয়োগ সম্পন্ন!

  • প্রকাশিত : বুধবার, ১০ মে, ২০২৩
  • ৪৬৯ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, তালা (সাতক্ষীরা)

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরা কেএসডি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচটি পদে কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার আগেই নিয়োগ সম্পন্ন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় অর্ধ কোটি টাকা বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষার হওয়ার আগেই জানা যাচ্ছে কোন পদে কে চাকরি পেতে যাচ্ছেন।পছন্দের প্রার্থীদের অলিখিত নিয়োগ প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলেও ঐ অভিযোগে বলা হয়েছে। যদিও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি প্রথমত বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও সর্বশেষ সাংবাদিক নেতাদের সাথে কথা হয়েছে বলে জানান তারা।

অভিযোগে জানাগেছে, খেশরা কেএসডি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক, ল্যাব সহকারী, পরীচ্ছন্নতাকর্মী ও নিরাপত্তাকর্মী মোট ৫টি পদে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় গত ২৯ নভেম্বর ২২’ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে বলা হয়। তবে পরীক্ষার আগে চুক্তি সম্পন্ন না হওয়ায় দরকষাকষিতে চলে যায় লম্বা সময়। এক পর্যায়ে প্রতিটি পদে মোটা অংকের টাকায় চুক্তি শেষে পছন্দের প্রার্থী চুড়ান্ত হওয়ায় সর্বশেষ নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১৩ মে’ শনিবার সকাল ১০ টায় সাতক্ষীরা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র উল্লেখ করে গত ৪ মে’ ২০২৩/৩৪ নং স্মারকে প্রার্থীদের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ৩ জন,অফিস সহকারী পদে ৪ জন,ল্যাব সহকারী পদে ৪ জন, নিরাপত্তাকর্মী পদে ১০ জন,পরিচ্ছন্নকর্মী পদে ৫ জনসহ ৫টি পদে মোট ২৬ জন প্রার্থী আবেদন করেন। এরপর যাচাই-বাছাইতে অফিস সহকারী পদে খায়রুল আলম নামে একটি আবেদন বাতিল হয়েছে। অর্থাৎ এ পদে সভাপতির এক ভ্রাতুষ্পুত্র বিশ্বজিৎ দাশকে সিলেক্ট করা হয়েছে। বাকি ২ জন তার ডামি প্রার্থী। মূলত এপদে কোরাম পূরণ করতে তাদেরকে দিয়ে আবেদন করানো হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে মাছুম বিল্লাহকে,পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে বিদ্যেৎসাহী সদস্য’র বৌমা সুমাইয়া খাতুনকে, ল্যাব সহকারী পদে আকাশ দাশকে, নিরাপত্তা কর্মী পদে তাপস দাশকে এবং অফিস সহকারী পদে স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতির আপন ভাইপো বিশ্বজিৎ দাশকে পরীক্ষার আগেই অলিখিত নিয়োগ চুড়ান্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাধন দাশ ও সভাপতি পবিত্র মোহন দাশ পরষ্পর যোগসাজশে কতিপয় সদস্যসহ অন্যান্যদের ম্যানেজ করে লোক দেখানো এ নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন। বিষয়টি নিয়ে ইতোপূর্বে স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন পরিচালনা পরিষদের এক অভিভাবক সদস্য আকরাম হোসেনসহ অভিভাবকরা।

পরিচালনা পরিষদের সদস্য মো. আকরাম হোসেন এপ্রতিনিধিকে বলেন, পাঁচটি পদে আবেদনপত্র আহবান করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে সভাপতি-প্রধান শিক্ষক যৌথভাবে প্রতিটি পদে লোক নিয়োগে রীতিমত দরবার শুরু করেন। সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর্যায়ে চলে যাওয়ায় তড়িঘড়ি করে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন।এছাড়া তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক হিসেবে সাধন দাশকে নিয়াগ দিতে তার ভুতপূর্ব প্রধান শিক্ষককের চাকুরীর মেয়াদ শেষে দীর্ঘ ৩ বছর পর্যন্ত তাকেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে রাখা হয়। এরমধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে ৩ বছর পর তার বয়স বা অভিজ্ঞতা পূর্ণ হলে তাকেই প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রার্থী এপ্রতিনিধিকে এপ্রতিনিধিকে জানান, অনেক আশা নিয়ে চাকুরির জন্য বিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি। আবেদন জমা দেওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে বলে অভয় দিলেও সর্বশেষ প্রতি পদে ন্যুনতম ১০ লাখ টাকা করে ডোনেশনের নামে উৎকোচ নিয়ে চাকুরি দেওয়া হচ্ছে।তাই নিয়োগ বন্ধের জন্য তিনিও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন।

বিদ্যালয়ের প্রতিটি পদের নিয়োগ যোগ্যতা বা মেধার ভিত্তিতে নয়, টাকার পরিমাপে মিলছে সেখানকার চাকুরী এমনটি দাবি করে আক্ষেপের সাথে আরেক প্রার্থী জানান, তিনি অতিশয় দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তিনিও একটি পদে আবেদন করেছিলেন। তবে উৎকোচের ভরে চাপা পড়ে যাচ্ছে তার সব আশা।এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাধন কুমার দাশ জানান, আগামী ১৩ মে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসময় কোন প্রার্থীর কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা নেওয়া হয়নি বলে দাবি করে তিনি বলেন, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়োগ সম্পন্ন হবে।

বিদ্যালয়ের সভাপতি পবিত্র মোহন বিশ^াস এ প্রতিনিধিকে বলেন, নিয়োগে কোনো অর্থের লেনদেন হচ্ছে না। একটি মহল স্কুল এবং কমিটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ জানান, আগামী ১৩ মে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। নিয়োগে কোনো অর্থের লেনদেন হচ্ছে কিনা সেটা তার জানা নেই।তবে নিয়োগে কোন প্রকার অনিয়ম-দূর্নীতি বরদাস্ত হবেনা বলেও জানান তিনি।

তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আরাফাত হোসেন এপ্রতিনিধিকে বলেন, নিয়োগে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। অভিযোগকারী জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। অনুলিপি অনুযায়ী অবগত হয়েছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহাদয় খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্নের দাবি জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য, অভিভাবকসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

একই বিভাগের সকল খবর