পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি::
খুলনার পাইকগাছায় বন উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই উপজেলা বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায়ের নির্দেশ সরকারি রাস্তার গাছ কর্তনের অভিযোগ পাওয়াগেছে।
অভিযোগে জানানো হয়, পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের দেবদুয়ার মালোপাড়া এলাকায় সেখানকার জনৈক ইন্দ্রজিৎ ও ভবতোষের নের্তৃত্বে কয়েক লক্ষ টাকার মূল্যের ৬টি বড় সাইজের সিরিষ গাছ (রেন্টি) কর্তন করে তা চেরাইয়ের উদ্দেশ্যে স্থানীয় ফুলতলা বাজারে একটি স’ মিলে রাখা হয়েছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সরেজমিনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাছ কর্তনের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা বন কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে কর্তনকৃত গাছগুলি জব্দ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার চাঁদখালীর দেবদুয়ার মালোপাড়া সংলগ্ন সড়কের গাছগুলি সেখানকার রাস্তা ভাঙ্গনরোধে ব্যাপকভাবে কার্যকরি ছিল।
তারা জানান, গত ২০ মার্চ’ ২৪ গাছগুলি কর্তনে উপজেলা বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায়ের স্বাক্ষরিত একটি অনুমতি পত্রের প্রেক্ষিতে গত কয়েক দিন ধরে স্থানীয় ইন্দ্রজিৎ ও ভবতোষের নেতৃত্বে গাছ গুলো কাটা হয়। এরপর গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে গাছগুলো ইঞ্জিন চালিত নসিমনযোগে ফুলতলা বাজার সংলগ্ন একটি স’মিলে চেরাই’র উদ্দেশ্যে রাখা হয়।
এদিকে সরকারি রাস্তার পাশের গাছ কর্তনের খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা।
বিষয়টি ঐদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তার নির্দেশে উপজেলা বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায় তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পৌছে কর্তনকৃত গাছের অংশগুলো ফুলতলার ঐ স’মিল থেকে জব্দ করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইন্দ্রজিৎ বলেন, গাছগুলো তাদের লাগানো। এমনকি উপজেলা বন কর্মকর্তার প্রেমানন্দ রায়ের অনুমতিতে তারা গাছগুলি কর্তন করেন বলেও দাবি তার।
অপর অভিযুক্ত ভবতোষ’র প্রতিক্রিয়া জানতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
উপজেলা বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায় বলেন, গাছ গুলো ওদের লাগানো তাই তাদের গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছেন তিনি। তবে শুক্রবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে স্থানীয় ফুলতলা স’মিল থেকে কর্তনকৃত গাছের অংশ গুলো জব্দ করেছেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন বলেন, সরকারি গাছ কাটার জন্য কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি। গাছ কর্তনের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক উপজেলা বন কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে স’মিল থেকে কর্তনকৃত গাছের অংশ গুলো জব্দ করা হয়েছে। তবে সরকারি গাছ কর্তনের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, উপজেলা বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায় ২০১৭ সালে উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কের সরকারি গাছ কর্তনে উপজেলা বন উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ কমিটির নামমাত্র অনুমতি প্রদান ও কর্তনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সেসময় দূর্নীতির দায়ে কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায়কে অন্যত্র বদলী করেন।