1. sheikhnadir81@gmail.com : admin :
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১০:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
সৈয়দপুরে ভারতে পাচারের জন্য রাখা বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার, গ্রেফতার-১ কেশবপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান ওসিসহ ৩জনের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ঘূর্ণিঝড় ‘রিমেল’মোকাবেলায় খুলনায় প্রস্তুত ৬০৪টি আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি ৩টি মুজিবকেল্লা আনন্দ গুপ্তার হুইল চেয়ার পেয়ে আনন্দে আত্মহারা বৃদ্ধের পরিবার! এসএসসিতে সৈয়দপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অভাবনীয় সাফল্য সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পেলেন মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী তালার মাদক ব্যবসায়ী আটক পাইকগাছায় খুলনাসহ ৫ বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি পাইকগাছায় গাছের ডাল কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু ডুমুরিয়ায় গ্রাম পুলিশদের ৩০ দিনের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

পাইকগাছায় মধুমিতা পার্কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে হাইকোর্টের নির্দেশ

  • প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০২৩
  • ২৩ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাইকগাছা (খুলনা)::

খুলনার পাইকগাছা পৌরসভার প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত মধুমিতা পার্কের সকল অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদপূর্বক পূর্বের অবস্থা ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে মহামান্য হাইকোর্ট।

এরআগে দখলদাররা বিভিন্ন সময় পার্কের নিরাপত্তা প্রাচীর ভেঙ্গে ও অভ্যন্তরীন রাস্তা বন্ধ করে সেখানে পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করেন। ঘটনায় পার্ক সংরক্ষণ কমিটি প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেও কাজ হয়নি। এরপর অবৈধ বন্দোবস্ত বাতিল ও দখলকার্যক্রম বন্ধে স্থানীয় সহকারী জর্জ আদালতে মামলা করলে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। তবে দখলদাররা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দখল কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।

এরপর হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করলে ২০০৫ সালে পার্ক অভ্যন্তরে অবৈধ নির্মাণকাজ বন্ধে নির্দেশ দিলেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দখলদাররা স্থাপনা বহাল রেখে সেখানে ব্যবসা কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। যা মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের অবমাননা ও গুরুতর অপরাধ। সর্বশেষ সামগ্রিক বিষয় উল্লেখ করে মধুমিতা পার্ক সংরক্ষন কমিটি গত বছর মহামান্য হাইকোর্টে কোর্ট অব কন্টেম পিটিশন দাখিল করেন। কয়েক দফা শুনানী শেষে গত ১৩ মার্চ মহামান্য হাইকোর্ট বিবাদীদেরকে সকল প্রকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সেখানে পার্কের পূর্বের অবস্থা ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। নতুন করে পৌরসদরের মধুমিতা পার্কের প্রাণ ফেরানোর খবরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করলেও তা বাস্তবায়ন নিয়ে যথারিতি শঙ্কা রয়েই গেছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়, খুলনার পাইকগাছা পৌরসভার প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত মধুমিতা পার্ক যা বাতিখালী মৌজার সাবেক ৯১ খতিয়ানের ১৭১ ও ১৭২ দাগের ১.০৭ একর জমির উপর অবস্থিত। স্থানীয় জনৈক মাদার মন্ডল তার স্বত্ব দখলীয় এ জমি অখন্ড ভারত সরকারের নামে দান করেন। সরকারি এ জমিতে একসময় পুকুর খননের মাধ্যমে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মিষ্টি পানির অভাব দূর হয়। লবণাক্ত অঞ্চলজুড়ে এ পুকুর থেকে মিষ্টি পানির সংকুলান হওয়ায় স্থানীয়রা সেই থেকে পুকুরটির নাম দেন মিষ্টি পুকুর।

গুরুত্ব বিবেচনায় ১৯৮০ সালে তৎকালিন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মিষ্টি পুকুরটির সংরক্ষনে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেন। পরে খুলনা জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম পুকুরের প্রাচীর অব্যন্তরে সুষ্ঠু চলাচলে চতুর্পাশে রাস্তা নির্মাণ ও পাকা ঘাঁট ও বসার জন্য পাকা বেঞ্চ নির্মাণের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলদ ও ফুলের গাছ রোপন করেন। এরপর সেখানে এক মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অবসরে সময় কাটাতে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিস্তির্ণ অঞ্চল থেকে উপজেলা সদরে বিভিন্ন কাজে আগতরা সময় কাটাতে থাকেন সেখানে। এরপর স্থানটির নাম মধুমিতা পার্ক হিসেবে নামকরণ করে জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম এর শুভ উদ্ভোধন করেন।

উপজেলা সদরের পাশাপাশি পৌরসভা গঠন হলে সদরের কোটি কোটি টাকা মূল্যের এ সম্পত্তির উপর নজর পড়ে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যু রাজনৈতিক ছদ্মাবরণে নেতা-কর্মী ব্যবসায়ীদের। খুলনা জেলা পরিষদের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যোগসাজশে পার্কের প্রাচীর ও নয়নাভিরাম রাস্তা ভেঙ্গে সেখানে পাকা দোকান-ঘর নির্মান করে নিজেদের দখলে নেয়।

এমন পরিস্থিতিতে পৌরসভায় সচেতন মহল ভিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের সমন্বয়ে মধুমিতা পার্ক সংরক্ষন কমিটি গঠনপূর্বক এর ব্যানারে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধনসহ কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেন। তবে এতেও কাজ নাহওয়ায় অবৈধ বন্দোবস্ত বাতিল ও দখলদারদের কার্যক্রম’র বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি মামলা করেন। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে নিষেধাজ্ঞাজারী করলেও দখলদাররা তা অমান্য করে তাদের দখলকার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।

এরপর পার্ক সংরক্ষন কমিটি তৎকালিন জাতীয় সংসদের স্পীকার শেখ রাজ্জাক আলীর শরানাপন্ন হলে তার পরামর্শে ২০০৫ সালে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। যার নং- ৩৫৯০/০৫। মহামান্য আদালত শুনানি শেষে ২০০৫ সালের ২৪ মে মধুমিতা পার্কের অভ্যন্তরে সকল প্রকার অবৈধ নির্মান কাজ বন্ধ করতে আদেশ দেন। তবে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে পরষ্পর যোগসাজশে হাইকোর্টের আদেশ অবমাননা করে দখলদাররা দীর্ঘদিনেও তাদের কার্যক্রম বন্ধ করেনি।

সর্বশে পার্ক সংরক্ষণ কমিটি ২০২২ সালে সার্বিক পরিস্থিতি উল্লেখ করে মহামান্য হাইকোর্ট কোর্ট অব কন্টেম পিটিশন দাখিল করেন। যার নং ১০২/২২। যার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক দফার শুনানী শেষে গত ১৩ মার্চ ২৩’ আদালত আগামী ২০ দিনের মধ্যে বিবাদী পক্ষকে মধুমিতা পার্কের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদপূর্বক পার্কটির পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

উচ্চাদালতের নির্দেশার বিষয়টি স্বীকার করে মধুমিতা পার্ক সংরক্ষন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা জ্যৈষ্ঠ আইনজীবি এ্যাড. জি,এ সবুর ও পার্ক সংরক্ষন কমিটির সভাপতি এ্যাড.এফ,এম,এ রাজ্জাক জানান, হাইকোর্টের আদেশের কপি পাওযা সাপেক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম সাংবাদিকদের জানান, আদালতের আদেশের কপি পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

দীপ্ত/স/পাইক

সংবাদটি শেয়ার করুন

একই বিভাগের সকল খবর
9262