আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা::
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৪ নং ফিংড়ী ইউনিয়নের হাবাসপুর পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত জমির জাল দলিল ও কাগজপত্র সৃষ্টি করে জমির মালিকানা দাবি করে এক ভুক্তভোগী পরিবারের দখলীয় এবং জায়গা জবর-দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি ভুমিদস্যুচক্র। ওই জায়গা জবর দখলে নিতে প্রতিনিয়ত জায়গার মালিককে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ঐ পরিবার ও জমির মালিকরা। এ নিয়ে ঐ জায়গার মালিক মৃত্যু মোছেল উদ্দীন সানার পুত্র মোঃ জিয়াউর রহমান সানা বাদী হয়ে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ আমলী আদালতে ১২ জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-৫৫/২৪।
উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের হাবাসপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
আদালতে দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নস্থ হাবাসপুর মৌজায় মৃত্যু কাশেম গং এর ওয়ারেশগন অত্র তফশিল ভূক্ত জমি বাদাকাটা ও দাদার আমল হইতে ভোগদখল করে আসছেন। আসামীরা জমি বর্গা চাষ করিতো কিছু কিছু জমি মৎস্য চাষ করিতো। ইতিমধ্যে আসামীরা বাদী ও স্বাক্ষীদের জমির বিষয় তাহাদের বাবা কাকাদের নাম ব্যবহার করে নিলাম বয়নামা, কোবলা দলিল, পাট্টা দলিল, এস,এ রেকর্ড, টি,এস মামলা, বি,আর,এস রেকর্ড ও জাল ওয়ারেশ কায়েম সনদপত্র তৈরি করে। মামলায় উল্লেখিত আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে দা, লাঠি, দেশীয় অস্ত্রপাতি নিয়ে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে অবৈধ দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এবং উক্ত ভুমি প্রতারণা করে অন্যের নামে অসত্য কাগজ পত্র সৃষ্টি করিয়া মিথ্যা বিবরণ দিয়ে ইং ১৯৩৪ তারিখের ১১৪১ নং খাজনা জারী মোকদ্দমা ও ২২৫২ নং বয়নামা তাং ২৪/১১/৩৩ এর সার্টিফিকেট ইং ১৭/০৭/৩৫ তারিখের ১৬৬৯ নং কোবলা দলিল ইং ৩০/০৮/৩৫ তারিখের ১৯০২-১৯০৪-১৯০৬ নং পাট্টা দলিল ইং ১৯৬২ তারিখের অসত্য ভ্রমাত্মক ২১ নং এস,এ, খতিয়ান ইং ০৬/০৬/৬৯ তারিখে টি,এস, ৯৫/৬৯ নং বাটোয়ারা / সোলেনামা / পাটিশন মামলা ও বিভিন্ন তারিখের অসত্য জাল ওয়ারেশ কায়েম সনদ পত্র ও ১৭/০৭/১৯৩৫ তারিখে ১৬৬৯ নং রেজিঃ কোবলা মূল দলিলের ব্যবহারিত স্ট্যাম ০৩ টি প্রকৃত জালভাবে প্রিন্ট করা। শুধু এখানেই ক্ষ্যান্ত হয়নি ভূমিদস্যুরা। হঠাৎ কাশেমগংদের স্বত্বীয় ভোগদখলীয় জায়গায় ফিংড়ী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কুলতিয়া গ্রামের মৃত্যু রজব আলী গাজীর পুত্র আঃ সাত্তার গাজী। কালিপদ ঘোষের পুত্র শ্রী জগবন্ধু ঘোষ, দীনবন্ধু ঘোষ ও শ্রী অরবিন্দু ঘোষ সহ ৮ জন মিলে ভুক্তভোগীর জায়গা জবর-দখল নিতে তান্ডব চালান। খবর পেয়ে ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমান সহ ওজিয়ার রহমান ও তার ছেলে বাঁধা দিতে গেলে তাদের নানা অশ্লীল গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করে।
ভুক্তভোগী জিয়াউর রহমান জানান, ওইসব জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার স্থানীয় ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে অভিযোগ করলে সালিশী বিচার করলেও অভিযুক্ত বিবাদীরা একদিনের জন্যও কোন ধরণের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে গ্রাম আদালতে বিচারকার্যে হাজির হয়নি। ওই সালিশি গ্রাম আদালতের বিচারেও ভুক্তভোগীর পক্ষে রায় দেন গ্রাম আদালত। এরইপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওই জবরদখলকারী চক্ররা জাল দলিল সৃষ্টি পূর্বক ও নানা ডকুমেন্টস সৃষ্টি করে স্বত্ব দখলীয় জায়গা জবর-দখল নিতে বেশ কয়েক দফা চেষ্টা চালায় বলে দাবী করেছেন জিয়াউর রহমান সানা। এছাড়াও জায়গা জবর দখলের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় তার পরিবারের সদস্যকে নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। জবর-দখল চেষ্টা অব্যহত ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার প্রেক্ষিতে সর্বশেষ আদালতে মামলা দায়ের করেন। সৃষ্ট বিষয় নিয়ে এলাকায় যে কোন মুহূর্তে বড় ধরণের সংঘর্ষের ঘটনা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে সূত্রে জানায়। এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় আওয়ামিলীগের এক নেতার কাছে জবরদখল চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অভিযুক্তরা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ করতেছে। জায়গার প্রকৃত স্বত্বদখলীয় মালিক হচ্ছে কাশেম গংরা।
এবিষয়ে আঃ সাত্তার গাজীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমাদের জায়গা মৃত্যু কাশেম গং গন দখল করে আছেন। শ্রী জগবন্ধু ঘোষের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে আলাপ কলটি গ্রহণ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।