1. sheikhnadir81@gmail.com : admin :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
পাইকগাছায় শ্রীকন্ঠপুর নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪টি পদে পরীক্ষার আগেই নিয়োগ চুড়ান্ত! একজন সফল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কপিলমুনির আবু হোসেন ডুমুরিয়ায় স্হানীয়ভাবে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তি প্রয়োগ ও সম্প্রসারণ শীর্ষক সেমিনার ও প্রদর্শনী তালায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে প্রতিযোগিতা টিকটকের ফাঁদে ফেলে কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণ খুলনায় ২৫ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড দিনের তাপমাত্রা বাড়ার সাথেই দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস তালায় অপরিপক্ক আম বাজারজাতের অভিযোগে জরিমানা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের গণমিছিল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি’র মু্ন্সীগঞ্জ জেলা শাখা কমিটির অনুমোদন

বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর

  • প্রকাশিত : রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩
  • ৬২ বার পঠিত

গাজী মোমিন উদ্দীন::

১৯৭৩ সালের ২৩ মে দিনটি ছিল বাঙালির ইতিহাসে অনন্য স্মরণীয় দিন। বাঙালি জাতির বহুল আকাঙ্ক্ষিত মহামানব, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালির রাখাল রাজা, বাঙালির সুর্যসন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দিনে মহান স্বাধীনতার পরে প্রথম কোন আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন। এই আন্তর্জাতিক পুরস্কারের নাম জুলিওকুরি শান্তি পদক। এই বছর এই পুরস্কার প্রাপ্তির ৫০ বছর পুর্ণ হয়েছে। বাঙালি শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় পালন করছে বঙ্গবন্ধুর জুলিওকুরি শান্তি পদক পুরস্কার প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী। এসএসসি পরীক্ষা চলমান থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান ২৩মে দিবসটি পালন করতে পারেনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক এই অর্জনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বর্তমান প্রজন্মকে জানাতে তাদের কাছে সেই সময়ের বঙ্গবন্ধুকে পৌছে দিতে দিবসটি পালন করছে সুবিধাজনক সময়ে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালির মুক্তির দিশারি। বঞ্চিত ও শোষিত বাঙালিকে মুক্তি দিতে, বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা দিতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেন। তিনি সবার সামনে থেকে এই মহান স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধের আহবান করেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তিনি ঐতিহাসিক ৭ মার্চের উত্তাল ঐঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এবারের সংরাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয়বাংলা। মানুষ তার ডাকে দেরি না করে ঝাপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। বাঙালি নারীপুরুষ নির্বিশেষে সবাই যার কাছে যা ছিল তাই নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চলে যায়। দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামে বাঙালি মুক্তির স্বাদ পায় মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীকে পরাস্ত করে। পাকিস্তানি বাহিনী ২৫ মার্চ রাতে বাঙালির মুক্তির নেতা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। পাকিস্তান কারাগারে থেকে মৃত্যুর খুব কাছাকাছি গিয়েও বাঙালির স্বাধীনতা প্রাপ্তির জন্য জীবন দিতেও পিছপা ছিলেন না। তিনি বলেছিলেন, তোমরা যদি আমাকে মেরে ফেল, আমার লাশ অন্তত বাংলার মাটিতে পাঠিয়ে দিও।

১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ইংল্যান্ড ও ভারত হয়ে ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এই প্রত্যাবর্তন পতে তিনি বাঙালির পুনর্বাসন ও বাংলাদেশের উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন। সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাফের বিরুদ্ধে মানবতা ও বিশ্বশান্তির পক্ষে কাজ করার জন্য, বাঙালির মুক্তি ও শান্তি দেওয়ায়, বাঙালির মুক্তির মাধ্যমে তিনি সারা বিশ্বের স্বাধীনতাকামী মানুষের পক্ষে কথা বলায় ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর চিলির রাজধানী সান্টিয়াগোতে বিশ্বশান্তি পরিষদের এক প্রেসিডেন্সিয়াল সভায় বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের প্রস্তাব করেন বিশ্বশান্তি পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল রমেশ চন্দ্র। সেই সম্মেলনে আগত প্রায় ১৪০টি দেশের ২০০ প্রতিনিধি সমস্বরে এই পুরস্কার প্রদানের পক্ষে মত প্রকাশ করেন। পরের বছর ২৩ মে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় এশীয় পিচ এন্ড সিকিউরিটি কনফারেন্সে বিশ্বশান্তি পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল রমেশ চন্দ্র বিশ্ব নেতাদের সামনে এই পুরস্কার বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দেন। পুরস্কার প্রদান করার সময়ে জনাব রমেশ চন্দ্র বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালির নন, তিনি বিশ্বের, তিনি বিশ্ববন্ধুও বটে।

এই পুরস্কার প্রাপ্তির পর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এই পুরস্কার শুধু ব্যক্তি মুজিবুরের নয়, এই পুরস্কার বাঙালির, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের। এই পুরস্কার বাঙালির ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। বঙ্গবন্ধুর কর্ম ও প্রজ্ঞার স্বীকৃতি এই পুরস্কার। ১৯৫০ সালে প্রবর্তিত এই পুরস্কারের নাম জুলিও কুরি শান্তি পদক হয় ১৯৫৯ সালে। ফরাসি পদার্থবিদ জঁ ফ্রেডেরিক জুলিও কুরি ১৯৫৮ সালে মারা যাওয়ার পর তার নামে এই পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। জুলিওকুরি নাম কীভাবে হল সেটা জানতে হবে এখন। জঁ ফ্রেডেরিক জুলিও ১৯২৬ সালে ২৬ বছর বয়সে বিয়ে করেন নোবেলজয়ী দম্পতি মাদাম ও পিয়েরে কুরির কন্যা ইরেন কুরিকে। দুজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ১৯৩৫ সালে তেজস্ক্রিয়তায় নোবেল পান এই দম্পতি। জঁ ফ্রেডেরিক জুলিও ও ইরেন কুরি দুজনের নামের শেষ অংশ দুজন গ্রহণ করেন। হয়ে যান জঁ ফ্রেডেরিক জুলিওকুরি ও ইরেন জুলিওকুরি। এই জুলিওকুরি শান্তি পদক নামেই পুরস্কার প্রদান শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু সেই কাতারে উঠে যান, যে কাতারে এই পুরস্কার বিজয়ীরা দাড়িয়ে ছিলেন। এই কাতারের অন্য বিশ্বনেতারা হলেন মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্টিন লুথার কিং, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, বাংলাদেশের ওকেৃত্রিম বন্ধু শ্রীমতী ইন্দ্রাগান্ধী, নোবেলজয়ী মাদার তেরেসা, ফিলিস্তিনের নেতা ইয়াসির আরাফাত, ভিয়েতনামের নেতা হোচিমিন, কিউবার রাষ্ট্রনায়ক ফিদেল ক্যাস্ট্রো, চিলির প্রেসিডেন্ট সালভেদর এলেন্দে, রাজনীতিবিদ ও কবি পাবলো নেরুদা, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট নেলসন মেন্ডেলা প্রমুখ। বামগালির গর্ব ও অহংকার বঙ্গবন্ধুর এই পুরস্কার প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী এই বছর। দিবসটিতে তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানাই। বাঙালির শান্তি শুধু নয় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করায় বিশ্বশান্তি পরিষদের এই পুরস্কার বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের জন্য এক বিরল পাওনা। মহান স্বাধীনতার ৫২তম বছরে এসে এই পুরস্কার প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী আরও জমকালো পরিবেশে পালন করা আমাদের দায়িত্ব। আমাদের এই সুবর্ণজয়ন্তীতে শপথ নিতে হবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় জীবন গড়ার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বৈশ্বিক নাগরিক হওয়ার। তার ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রায় পুরণের পথে। তার যোগ্য উত্তরসুরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আমাদের শামিল হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করতে হবে আমরা বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করেছি। বঙ্গবন্ধু আজ আছেন আমাদের কাজে কর্মে চিন্তায় চেতনায় মননে অন্তরে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

একই বিভাগের সকল খবর