1. sheikhnadir81@gmail.com : admin :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
তালায় অপরিপক্ক আম বাজারজাতের অভিযোগে জরিমানা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের গণমিছিল অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি’র মু্ন্সীগঞ্জ জেলা শাখা কমিটির অনুমোদন কয়রায় বোরো চাষাবাদে বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসি বুরুজবাগান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটি গঠনের তফসিল ঘোষনা মুন্সীগঞ্জে অটোরিকশার ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু পাইকগাছায় আধা কেজি গাঁজাসহ নারী মাদক ব্যবসায়ী আটক প্রকাশিত সংবাদের ভিন্নমত ডুমুরিয়ার কানাই ডাঙ্গা স্লুইচ গেটের সামনে পলি পড়ে ভরাট, ইউএনও’র পরিদর্শন তালায় অবৈধভাবে ৬০ বছর যাবত দখলে রাখা ৩৩ বিঘা সরকারি জমির দখলমুক্ত

ভালোবাসা দিবসের আদিঅন্ত

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৯১ বার পঠিত
valentine-day-5316

রাবিদ মাহমুদ চঞ্চল::


ভালোবাসা শব্দের অর্থ করা কোন পন্ডিতের পক্ষে সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি না। ভালোবাসার ওজন,রং,রুপ,সময়,ক্ষন,প্রকারভেদ নিরুপন করা অসম্ভব। ভালোবাসা ছিল-আছে-থাকবে এটাই নিয়ম। সৃষ্টির প্রতি স্রষ্টার ভালোবাসা আছে বলেই পৃথিবী নামের এই গ্রহটি এত সুন্দর। তবে দিবস দিয়ে কি ভালোবাসা হয়? দিবস দিয়ে যদি ভালোবাসা সনাক্ত করা যেত তাহলে এতদিনে পৃথিবী টা টিকে থাকতো কিনা এটা নিয়ে একটা সংশয় রয়েছে। সংগত কারণেই প্রশ্ন ভালোবাসা দিবস আসলে কি? কোথায় এর জন্ম? কিভাবে শুরু হয় ভালোবাসা দিবসের পথ চলা? একজন সুনাগরীক হিসেবে ভালোবাসা দিবস কি পালন করা উচিত? নাকি উচিত নয়? আর বর্তমান সমাজের যুবক-যুবতীরা ভালোবাসা দিবসকে কোন চোখে দেখছে? কি ভাবে উৎযাপন করছে ভালোবাসা দিবস? এসব নিয়ে আজকের পাঠকদের নিয়ে ছোট্ট পরিসরে লেখার প্রয়াস মাত্র।

চলুন দেখি ১৪ ফেব্রুয়ারিতে যে ভালোবাসা দিবস আমরা পেলে পুষে আসছি তার অন্তরে কি ইতিহাস অন্তঃ নিহত রয়েছে।

ভালোবাসা দিবস বা সেন্ট ভ্যালেন্টাইন দিবস যাকে অন্যভাবে সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন্স উৎসব ও বলা হয়। একটি বার্ষিক উৎসবের দিন। যে দিবসটি প্রতি বছর ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা এবং অনুরাগের মধ্যে দিয়ে উদযাপিত হয়। প্রথম দিকে এটি সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন নামক একজন অথবা দুজন খ্রিষ্টান শহিদকে সম্মান জানাতে খ্রিষ্টধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল, পরবর্তীতে লোক ঐতিহ্যের ছোঁয়ার মধ্যে দিয়ে এটি বিভিন্ন দেশে আস্তে আস্তে প্রেম ও ভালোবাসার সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক একটি আনুষ্ঠানিক দিবসে পরিণত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হয়ে থাকলেও বাংলাদেশ সহ অধিকাংশ দেশেই দিনটি ছুটির দিন নয়।

২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন খ্রিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচারের অভিযোগে নয়,বরং অনেকের সাথে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে তৎকালীন রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল,আর নৈতিকতার অবক্ষয়ও রোধ করা প্রয়োজন ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এর পেছনে কালো সত্যি আরো ভয়াবহ,সেই অন্ধ মেয়েকেও ইনি অবৈধ সম্পর্ক ছাড়া ছাড়েন না। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। আর তাই তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেন্টাইন স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করেন। খ্রিস্টান জগতে পাদ্রী-সাধু সন্তানদের স্মরণ ও কর্মের জন্য এ ধরনের অনেক দিবস রয়েছে। যেমন: ২৩ এপ্রিল সেন্ট জজ দিবস, ১১ নভেম্বর সেন্ট মার্টিন দিবস, ২৪ আগস্ট সেন্ট বার্থোলোমিজম দিবস, ১ নভেম্বর আল সেইন্টম দিবস, ৩০ নভেম্বর সেন্ট এন্ড্রু দিবস, ১৭ মার্চ সেন্ট প্যাট্রিক দিবস।

পাশ্চাত্যের ক্ষেত্রে জন্মদিনের উৎসব, ধর্মোৎসব সবক্ষেত্রেই ভোগের বিষয়টি মুখ্য। তাই গির্জা অভ্যন্তরেও মদ্যপানে তারা কসুর করে না। খ্রিস্টীয় এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বিনষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ করা হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদ্‌যাপন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।এছাড়া অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়। সম্প্রতি পাকিস্তানেও ২০১৭ সালে ইসলাম বিরোধী হওয়ায় ভ্যালেন্টাইন উৎসব নিষিদ্ধ করে সেদেশের আদালত। বর্তমানকালে পাশ্চাত্যে এ উৎসব মহা-সমারোহে উদ্‌যাপন করা হয়। যুক্তরাজ্যে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ড ব্যয় করে এই ভালোবাসা দিবসের জন্য কার্ড, ফুল, চকোলেট, অন্যান্য উপহারসামগ্রী ও শুভেচ্ছা কার্ড ক্রয় করে এবং আনুমানিক প্রায় ২.৫ কোটি শুভেচ্ছা কার্ড আদান-প্রদান করা হয়।

সর্বশেষ পাকিস্তান জনসম্মুখে ভালোবাসা দিবস পালন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ইসলাম পরিপন্থী বিধায়, এর আগে ইন্দোনেশিয়া ভালোবাসা দিবস পালন নিষিদ্ধ করে। ২০০৯ সাল হতে ইরানে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কার্যক্রম (যেমন: ফুল এবং কার্ড দেওয়া ইত্যাদি) নিষিদ্ধ।

বিভিন্ন গ্রন্থের আলোকে এই হলো ভালোবাসা দিবসের সারমর্ম। তবে এখন এই ভালোবাসা দিবসকে বাংলাদেশ এক অনন্য মাত্রা দেওয়া হয়েছে।

ভালোবাসা দিবসের সূচনা লগ্ন থেকে একটি অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়েছে। যে শারীরিক সম্পর্কের মধ্যে একজন নরনারী যৌথ সম্মতির অস্তিত্ব আছে কি নেই এটার সুস্পষ্ট উল্লেখ ইতিহাসে সুস্পষ্টও নয়।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে অধুনা যুগে আমাদের দেশে এই ভালোবাসা দিবস কে কেন্দ্র করে যোগ হয়েছে গোপনীয় শারীরিক-মানষিক সম্পর্কে একটা আদান প্রদান। যার ফলাফল কতটুকু বৈধ তা নিয়ে আমি নিজে কিছু না বলে আপনাদের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম?

পরিশেষে এতটুকু বলবো ভালোবাসা থাকবে এটাই নিয়ম। সৃষ্টির প্রতি স্রষ্টার ভালোবাসা আছে বলেই পৃথিবী নামের এই গ্রহটি এত সুন্দর। তবে দ্বীমত এখানে যে, ভালোবাসার কোন নিদিষ্ট দিবস হওয়া উচিত নয়। ভালোবাসা পবিত্র- চিরন্তন-শ্বাশত। ভালোবাসা হতে হবে জীবে ও প্রকৃতিতে। ভালোবাসা হবে সকাল থেকে সন্ধ্যা,সন্ধ্যা থেকে সকাল। এক কথায় সময় – কাল পক্ষ নির্নয় করে ভালোবাসা দিবস হওয়া মানে ভালোবাসা শব্দটা ছোট করা। সুতরাং বিশ্ব জুড়ে ভালোবাসা বিরাজমান হোক প্রতিটি সেকেন্ড-মিনিট-ঘন্টা থেকে দিবস ও রজনী।

লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

একই বিভাগের সকল খবর