1. sheikhnadir81@gmail.com : admin :
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
পাইকগাছায় ভ্রাম্যমান আদালতে কেমিক্যাল মিশিয়ে অপরিপক্ক আম পাকানোর অভিযোগে তিন ব্যবসায়ীকে জরিমান; ২৪ ক্যারেট আম বিনষ্ট প্রতিবন্ধী কিশোর আমিরুলের চিকিৎসায় সাহায্যের আবেদন পাইকগাছার হরিঢালীতে স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ীর নির্মম নির্যাতনে পুত্রবধূর মৃত্যু! মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঠিক আগেই ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা কয়রায় খান সাহেব কোমর উদ্দীন কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে হয়রানীর প্রতিবাদে সমাবেশ নলছিটিতে সর্বজনীন পেনশন স্কীম অবহিতকরণ সম্পর্কিত র‍্যালী ও আলোচনা সভা অপারেশনের নামে নিজেই রোগীদের হাত-পা কেটে পৈশাচিক আনন্দ পেতেন মিল্টন সমাদ্দার মুন্সীগঞ্জে টঙ্গীবাড়িতে অজ্ঞাত কিশোরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক দক্ষ ও যুগোপযোগী করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী খুলনাসহ ৮ বিভাগে কালবৈশাখী ঝড়ের সতর্কতা জারি

লাফিয়ে লাফিয়ে কাগজের মূল্য বৃদ্ধি: সংকটের মুখে চাকরি হারানোর শঙ্কায় খুলনার মুদ্রণ শ্রমিক-কর্মচারীরা

  • প্রকাশিত : সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০২২
  • ২২ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ৩ সপ্তাহ যাবত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কাগজের দাম। গত ৬ মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে মুদ্রণশিল্পের অন্যতম এই উপকরণের দাম। সর্বশেষ ৩ সপ্তাহ যাবত অবস্থা আরও বেশি শোচনীয় হয়েছে। অগ্রিম টাকা দিয়েও অনেক ছাপাখানার মালিকরা কাগজ পাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতে গভীর সংকটে পড়েছে খুলনার মুদ্রণশিল্প।

ছাপাখানা মালিকরা জানান, আমদানি নির্ভর কাঁচামাল এবং কাগজের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে ইতোমধ্যে কাজ কমেছে প্রায় ৬০ ভাগ। এতে ছোট ছোট ছাপাখানাগুলো বন্ধের উপক্রম হয়েছে। দাম বেড়েছে পড়ালেখার কাজে ব্যবহৃত কাগজও। যে লেখার খাতা এক মাস আগে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই খাতার দাম বেড়ে বর্তমানে হয়েছে ৮০ টাকা। এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতে কয়েকজন বড় পাইকারী
ব্যবসায়ীরাও ইচ্ছেমত কাগজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ করেন ছাপাখানা মালিকরা।

মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতির হিসাব অনুযায়ী খুলনায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১০৪টি ছাপাখানা রয়েছে । প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। কাজ কমে যাওয়ায় ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীরা চাকরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন।

খুলনা প্রেসক্লাবের পাশে বড় মির্জাপুর, বেনী বাবু, ধর্মসভায় সড়কে প্রায় দুই ডজন ছাপাখানা রয়েছে। শনিবার ও রবিার সকালে সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ছোট ছাপাখানা গুলো বন্ধ রয়েছে। কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

দেশ প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশনের স্বত্ত্বাধিকারী মুন্সি মাহবুবুল আলম সোহাগ বলেন, ‘গত কয়েক মাসে কাগজের দাম বেড়েছে দ্বিগুনেরও বেশি। বর্তমানে এমন অবস্থা চলছে সকালে একদাম আর বিকালে আরেক দাম। অগ্রিম টাকা দিয়েও কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না। লোকসানের আশংকায় সরকারি কাজের দরপত্র জমা দেওয়ার সাহস পাচ্ছি না। খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি কাজও কমে গেছে। কিন্তু ব্যাংক ঋণ, খরচ তো কমেনি। যে কারণে সব ব্যবসায়ীই কষ্টে আছেন।’

কাকন প্রিন্টিং অ্যান্ড প্রেসের স্বত্তাধিকারী নাসির উদ্দিন জানান, ছোট ছাপাখানার ৬০ ভাগ কাজই স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে তারা নতুন বছরের বই, খাতা, শিক্ষা কার্যক্রমসহ প্রয়োজনীয় কাগজ তৈরি করে। কিন্তু কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো হিসাব মেলাতে পারছেন না। ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ বন্ধ রেখেছে।

তিনি বলেন, সরকারি দপ্তরগুলোতে যে বরাদ্দ থাকতো গত জুলাইয়ের পর থেকে তাও কমে গেছে। সরকারি দপ্তরগুলোও আগের মতো কাজ করাচ্ছে না। যার কারণে ছাপাখানার সার্বিক কাজ কমে গেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

মুদ্রাকরের স্বত্ত্বাধিকারী আরিফ আহমেদ বলেন, অন্যান্য বছর এই সময় দমফেলার ফুসরত থাকতো না। প্রতিদিনই শ্রমিকদের ওভারটাইম কাজ করাতে হতো। কিন্তু এবার কাজ অনেক কম। কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিনই পুরাতন পাটি (গ্রাহকদের) সঙ্গে বাকবিতন্ডতা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

কয়েকজন ছাপাখানার মালিকদের কাগজ কেনার হিসাবে দেখা গেছে, ছাপার কাজে বেশি ব্যবহৃত ৫৫ গ্রাম (পুরুত্ব) কাগজের দাম বছরের শুরুতে ছিলো প্রতি রিম ১১২৫ থেকে ১১৫০ টাকা। গত জুন মাসে সেই কাগজের দাম বেড়ে দাড়ায় ১৮০০ টাকা। চলতি
সপ্তাহে একই কাগজ কিনতে হচ্ছে ২২৫০ থেকে ২২৮০ টাকা। ৮০ গ্রাম কাগজের দাম গত জুন মাসে ছিলো ২৫৬০ টাকা, গত সপ্তাহে একই কাগজ কিনতে হয়েছে ৩৩০০ টাকায়। ক্যালেন্ডার ছাপানোর আর্টকার্ডের দাম ছিলো ৩৩০০ টাকা। একই কাগজ
বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৫০০ থেকে ৬৬০০ টাকা। গত জুনে স্টিকার ছিলো প্রতি পিস ১৪ টাকা, গত সপ্তাহে তা বিক্রি হয়েছে সাড়ে ১৭ টাকা।

খুলনা মুদ্রণ শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি ও মধুমতি মুদ্রণালয়ের চেয়ারম্যান এস এম জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘ করোনাকালে দু’ বছর স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় মুদ্রণ শিল্পের দুর্দিন শুরু হয়। এরপর ব্যবসায়ীরা ঘুরাতে দাড়াতে শুরু করেছিলেন। এরই মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে কাগজের দাম বাড়তে শুরু করে। বর্তমানে যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

বছরের এই সময়টা সবাই ক্যালেন্ডার, ডাইরীসহ বই, খাতা, অন্যান্য প্রকাশনা ছাপায়। তবে অস্বাভাবিক হারে দাম বৃদ্ধির প্রভাবে আগে যারা ৫ রিম কাজ করাতেন, তারা এখন ১ রিমের কাজ করাচ্ছেন। অনেকে কাজই করাচ্ছেন না। কাজ কমে যাওয়ায় ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে পারছি না। মুদ্রণ শিল্পে এমন সংকট অতীতে কখনও হয়নি।দফায় দফায় অস্বাভাবিক হারে কাগজের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে ইতোমধ্যে নগরীর অনেক ছোট প্রতিষ্ঠান বাধ্য হয়েই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

একই বিভাগের সকল খবর