রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ফলে উত্তরাঞ্চলের মানুষ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। এ কেন্দ্র থেকে মানুষের কোনো ক্ষতি হবে না। এর মাধ্যমে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের মূল যন্ত্র রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লি পাত্র) স্থাপন কাজের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ। স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব জিয়াউল হাসান । অনুষ্ঠানে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ফলে প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েই এগিয়ে যাবে। ওই কেন্দ্রের যে যন্ত্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল (পারমাণবিক জ্বালানি) ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, তার মূল কাঠামো হচ্ছে এই বিশেষ যন্ত্র, পারমাণবিক চুল্লি। এটিকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃৎপিণ্ড বলা হয়।
এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরের মধ্যে রূপপুর প্রকল্পই দেশের সবচেয়ে বড় এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে সর্বাধিক ব্যয়বহুল প্রকল্প।
রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, আর্থিক ও প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সার্বিক সহযোগিতায় পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এতে স্থাপন করা হচ্ছে রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বশেষ প্রযুক্তি থ্রি জি (প্লাস) ভিভিইআর ১২০০ মডেলের রিয়াক্টর। রোসাটম প্রকৌশল শাখা এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
দুটি ইউনিটে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এটি। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালের শেষ দিকে প্রথম ইউনিট থেকে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং ২০২৪ সালের শেষ দিকে দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলে টানা ৬০ বছর কার্বন নিঃসরণ ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে পারমাণবিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের আয়ুষ্কাল আরো ২০ থেকে ৩০ বছর বাড়ানো যায়। সে হিসাবে ৮০-৯০ বছর পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে প্রচলিত জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে এখান থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।