1. sheikhnadir81@gmail.com : admin :
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
পাইকগাছায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন পাইকগাছায় শ্রীকন্ঠপুর নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪টি পদে পরীক্ষার আগেই নিয়োগ চুড়ান্ত! একজন সফল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কপিলমুনির আবু হোসেন ডুমুরিয়ায় স্হানীয়ভাবে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তি প্রয়োগ ও সম্প্রসারণ শীর্ষক সেমিনার ও প্রদর্শনী তালায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে প্রতিযোগিতা টিকটকের ফাঁদে ফেলে কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণ খুলনায় ২৫ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড দিনের তাপমাত্রা বাড়ার সাথেই দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস তালায় অপরিপক্ক আম বাজারজাতের অভিযোগে জরিমানা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের গণমিছিল অনুষ্ঠিত

বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার পিসি রায়ের জন্মদিন আজ

  • প্রকাশিত : সোমবার, ১ আগস্ট, ২০২২
  • ২৭ বার পঠিত

শেখ নাদীর শাহ্:


আজ ২ আগস্ট। বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী আচার্য স্যার পিসি রায়ের (প্রফুল্ল চন্দ্র রায়) ১৬১ তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দের এদিনে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার বাড়ুলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বহু প্রতিভার অধিকারী প্রখ্যাত এ বাঙালি বিজ্ঞানী ছিলেন রসায়নবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক ও কবি। তিনি বেঙ্গল কেমিক্যালসের প্রতিষ্ঠাতা এবং মার্কারি (ও) নাইট্রেটের আবিষ্কারক। দিবসটি উপলক্ষে খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষে বিজ্ঞানীর গ্রামের বাড়ি রাড়ুলীতে দিনভর ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

বিকাল ৩ টায় খুলনা জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, সংষ্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের এমপি আলহাজ্জ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু, খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান (বিপিএম), উপজেলা চেয়ারম্যান মো: আনোয়ার ইকবাল মন্টু, পাইকগাছা পৌরসভার মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, আচার্য্য পিসিরায় স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবুল কালাম আজাদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন, পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম।

পিসি রায়ের বাবা হরিশ চন্দ্র ও মা ভুবনমোহিনী দেবী। তার বাবা ছিলেন স্থানীয় প্রসিদ্ধ জমিদার। ছেলেবেলা থেকেই পিসি রায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তার পড়াশোনা শুরু হয় পিতার প্রতিষ্ঠিত এমই স্কুলে।

১৮৭২ সালে তিনি কলকাতার হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন, কিন্তু রক্ত আমাশয়ের কারণে তার পড়ালেখা বিঘিœত হলে বাধ্য হয়ে তিনি নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। গ্রামে থাকার সময় তার জীবনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। তিনি বাড়ির গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত নানা বিষয়ের প্রচুর বই পড়েন।

ওই সময় কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন অলেকজান্ডার পেডলার। খ্যাতিমান এ অধ্যাপকের সান্নিধ্যে এসে রসায়নের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় তার। কলেজের পাঠ্যবই ছাড়াও বিভিন্ন পাঠাগার থেকে রসায়নের বই সংগ্রহ করে পড়তেন। নিজের চেষ্টায় বাড়িতে পরীক্ষাগার স্থাপন করে রসায়ন সম্পর্কে নানারকম পরীক্ষাও চালাতেন ঐ সময়ে।

দেশের গর্ব বরেণ্য এ বিজ্ঞানী ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন কলেজে (বর্তমান বিদ্যাসাগর কলেজ) ভর্তি হন। ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দে সেখান থেকে এফ এ পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে পাস করে তিনি প্রেসিডেন্সী কলেজে বিএ ক্লাসে ভর্তি হন। প্রেসিডেন্সী থেকে গিলক্রিস্ট বৃত্তি নিয়ে তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে বিএসসি এবং ডিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ওই সময় তিনি শ্রেষ্ঠ গবেষণাপত্রের জন্য ‘হোপ প্রাইজ’এ ভূষিত হন।

ইউরোপের নানা দেশ ঘুরে ১৮৮৮ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র রায় দেশে ফিরে আসেন। সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন প্রেসিডেন্সি কলেজে।

১৮৯৫ সালে তিনি মারকিউরাস নাইট্রাইট [HgNO2] আবিষ্কার করেন যা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। এটি তার অন্যতম প্রধান আবিষ্কার। সমগ্র জীবনে মোট ১২টি যৌগিক লবণ এবং পাঁচটি থায়এস্টার আবিষ্কার করেন তিনি।

১৯০৩ সালে চারটি গ্রামের নাম মিলে বিজ্ঞানী স্যার পিসি রায় দক্ষিণ বাংলায় প্রথম আর.কে.বি.কে হরিশচন্দ্র ইনস্টিটিউট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেন। এরআগে একইস্থানে স্যার পিসি রায়ের পিতা উপমহাদেশে নারী শিক্ষার সম্প্রসারণে ভূবনমোহিনীর নামে ১৮৫০ সালে রাড়ুলী গ্রামে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যখন বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন গোপনে অস্ত্র ক্রয়ের জন্য তিনি বিপ্লবীদের সাহায্য করেন।

১৯০৯ সালে নিজ জন্মভূমিতে কো-অপারেটিভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৯১৬ সালে কলকাতায় তিনিই প্রথমবারের মত মহাত্মা গান্ধীর জনসভা আয়োজন করেছিলেন।

১৯৩৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতবর্ষের মহিশুর ও বেনারশ বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।
এছাড়া মৃত্যুর আগে তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি ও নাইট উপাধি অর্জন করেন।

১৯৪৪ সালে ১৬ জুন জীবনাবসান ঘটে চিরকুমার বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের। এই বিজ্ঞানী তাঁর জীবনের অর্জিত সমস্ত সম্পত্তি মানব কল্যাণে দান করে যান।

করোনার ঢেউ কাটিয়ে এবার উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় রাড়ুলী ইউনিয়ন পরষদের ব্যাবস্থাপনায় তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে গ্রামের বাড়ি রাড়ুলীতে দিনভর ব্যাপক কর্মসূচীর আয়োজন করেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

একই বিভাগের সকল খবর