1. sheikhnadir81@gmail.com : admin :
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
খুলনায় বাসে তল্লাশি চালিয়ে স্বর্ণের বারসহ ১ব্যক্তি আটক কলারোয়ায় স্বামীকে অচেতন করে পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর আত্মহত্যা! নলছিটির সুগন্ধা নদীতে নিখোঁজ আদিত্য’র খোঁজ মেলেনি ৭ দিনেও জলবায়ু খাতে আর্থিক বিনিয়োগের দাবিতে সাতক্ষীরায় তরুণদের ধর্মঘট ও মানববন্ধন পাইকগাছায় লবণ পানি উত্তোলন বন্ধের দাবিতে পথসভা ও লিফলেট বিতরণ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের আব্দুল গফুরের শরীরে বাসা বেঁধেছে জটিল রোগ সাহায্য কামনা কয়রায় প্রানিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত চলে গেলেন সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী আশাশুনিতে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রাজ’র মনোনয়ন সংগ্রহের অর্থ জমা মুন্সীগঞ্জে মাই টিভি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

সংস্কারের অভাবে অস্তিত্ব হারাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী তালার মিয়া মসজিদ

  • প্রকাশিত : বুধবার, ২০ জুলাই, ২০২২
  • ২৯ বার পঠিত
ঐতিহ্যবাহী তালার মিয়া মসজিদ

শেখ ইমরান হোসেন ::

অসাধারণ কারুকাজ ও সুনিপুনভাবে তৈরী ঐতিহ্যবাহী মিয়া মসজিদটি সংস্কারের অভাবে তার নিজস্ব রুপ ও অবকাঠামো হারিয়ে যাচ্ছে। অতীতের ইতিহাস ঐতিহ্যের নিদর্শন সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদ।
কালের বিবর্তনে কথাতিত ভাবে যেটি ধীরে ধীরে মিয়া মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। মিয়া মসজিদ নামে পরিচিত লাভ করলেও এটির আরও একটি প্রচলিত নাম রয়েছে সেটি হলো ‘হাত কাটা মিয়া মসজিদ’।

লোক মুখে প্রচলিত আছে যে এই মসজিদটি তৈরী করেছিলো তার হাত কেটে দিয়েছিলো তৎকালীন সময়ে ওই অঞ্চলের শাসক। হাত কাটার কারন ছিলো সে যেন এই অবকাঠামো ও এমন কারুকার্য খচিত মসজিদ যেন দ্বিতীয়টি তৈরী করতে না পারে। তবে এমন প্রচলিত গ্রাম্য কথার সঠিক কোন প্রমাণ নেই।

দক্ষিণ অঞ্চলের ধর্মভীরু মুসলিমদের সর্ববৃহৎ ইবাদাতের স্থানটি সংস্কার ও যথাযথ পরিচ্ছন্নতার অভাবে সৌন্দর্য হারিয়ে গেছে। মসজিদটির সাথে সাদৃশ্য করলে কলকাতার ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা গেলেও তার সঠিক তদারকি ও সংস্কারের অভাবে তার সৌন্দর্য বিলুপ্তি প্রায়।

জানা যায়, ষোল’শ শতাব্দীর প্রথমদিকে মোঘল আমলে তৎকালীন মুসলিম ধার্মিক জমিদার কাজী সালামতুল্লাহ খান বাহাদুর এই প্রার্থনাস্থলটি (মসজিদ) নির্মাণ করেন। তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশ থাকাকালীন সময়ে বিহারের এক বাসিন্দা মসজিদটির নকশা ও কারুকাজের জন্য প্রধান মিস্ত্রির দায়িত্বে ছিলেন। মসজিদের গায়ে লাগানো একটি প্লেটে উল্লেখ রয়েছে, মসজিদটি ১৮৫৮-৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা খান বাহাদুর মৌলভী কাজী সালামতউল্লাহ যাহা “মোঘল মনুমেন্টস অব বাংলাদেশ” নামক গ্রন্থে প্রকাশিত তথ্য দ্বারা প্রমাণিত।

ঐতিহ্যের মিয়া মসজিদের ব্যাতিক্রমী কারুখচিত গম্বুজ

সরোজিম ঘুরে জানা যায়, এক একর জমির উপর নির্মিত মসজিদটির উত্তর পার্শ্বে দুই একর জায়গা জুড়ে একটি দিঘি আছে। কথিত আছে যে এই দিঘির জল কখনও শুকায় না। দিঘি যখন পানিতে পরিপূর্ণ থাকে তখন মসজিদের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। মসজিদটিতে ৭ টি দরজ,১৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ৬ টি বড় গম্বুজ, ৮ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ১৪টি মিনার ও ২৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট চার কোনায় ৪টি মিনার রয়েছে।

সুপরিকল্পিত ও সৌন্দর্যবদ্ধিত ভাবে তৈরী করলেও সঠিক তদারকি অভাবে প্রার্থনাকেন্দ্র টি তার পূর্বের রুপ হারিয়েছে। ঘুরে দেখা গেছে, ভবনটির রং চটে গেলেও সেটার কোন সংস্কার নেই। তাছাড়া ভবনে বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হলেও সেটার সঠিক তদারকি করেনা কতৃপক্ষ।

এদিকে, ভবনটি রং উঠে গেলেও পুনঃরায় রং করানোর কাজ করা হয়নি । বিভিন্ন মিনারের কিনারা থেকে বালু ধসে পড়ছে। ভবটির মুল অবকাঠামোতে বড় বড় ফাটল ধরেছে। বাউন্ডারিতে পরিচ্ছন্নতার অভাবে বিবর্ণ রং ধারন করেছে। তাছাড়া মসজিদ সংলগ্ন দিঘিতে যথাযথ পানি সরবরাহ না থাকায় দিঘিটি তার নিজস্ব সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছে।

মসজিদের নিয়মিত মুসাল্লী কাজী রফিকুল ইসলাম জানান, বাপ দাদার আমল থেকে এখানে নামাজ পড়ছি। মসজিদের সৌন্দর্যরূপ আগে বেশি ছিলো। যথাযথা পরিচ্ছন্নতা না করায় আগের রুপ হারিয়েছে এই ইতিহাস বহরকারী প্রার্থনাস্থলটি। কতৃপক্ষ যদি সঠিকভাবে দেখভাল করে ও পুনঃরায় সংস্কার করে তাহলে আগের মত সৌন্দর্যসম্ভোগ হবে।
তিনি আরও জানান, এখানে নিয়মিত দর্শনার্থীরা আসে ঘুরতে। তাই যতদ্রুত সম্ভব মসজিদটি সংস্তার করে সৌন্দর্যমন্ডিত করা জরুরী।

মসজিদের ভেতরের অংশ

মসজিদের মুয়াজ্জিন মোঃ মাসুদুর রহমান জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের আমলে সবশেষ সংস্কার ও রং করা হয়েছিলো। গত ২৬ বছরে কোন সংস্কার হয়নি মসজিদটি। সংস্কার করার উদ্যোগ নিলে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর এসে বাঁধা প্রদান করে এবং বলে বাজেট পাশ হলে তখন সরকারি ভাবে সংস্কার করা হবে। তিনি আরও জানান, বিনা পারিশ্রমিকে দীর্ঘ বছর এই মসজিদের খেদমত করে করছেন।

তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার জানান, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় আমরা অবকাঠামোগত কাজ করতে পারিনা। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের যিনি কিউরিটর রয়েছেন তিনি এটার সংস্কার করার বিষয়ে ভালো তথ্য দিতে পারবেন।

এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা আঞ্চলিক প্রধান আফরোজা খাঁন মিতা জানান, গত অর্থ বছরে মিয়া মসজিদের বাজেদের দাবী জানানো হলেও সেটা পাশ হয়নি। তবে এবছর আবার বাজেটের জন্য আবেদন পাঠানো হবে। আশাকরি বাজেট পাশ হলে এ বছরেই সংস্কারের কার্যক্রম চালু হবে।

তিনি আরও জানান, দেশের অনেক স্থানে এমন কার্যক্রম প্রতিনিয়ত চালু রয়েছে। ধারাবাহিকতা অনুযায়ী এটাও কার্যক্রম শুরু হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

একই বিভাগের সকল খবর