1. sheikhnadir81@gmail.com : admin :
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
ডুমুরিয়ার কানাই ডাঙ্গা স্লুইচ গেটের সামনে পলি পড়ে ভরাট, ইউএনও’র পরিদর্শন তালায় অবৈধভাবে ৬০ বছর যাবত দখলে রাখা ৩৩ বিঘা সরকারি জমির দখলমুক্ত কপিলমুনির ইউপি সদস্য ওজিয়ার সাতক্ষীরায় মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতার টঙ্গীবাড়ীর পাঁচগাঁও ও সিদ্ধেশ্বরী বাজারে নির্বাচনী গনসংযোগ করলেন আরিফুর রহমান হালদার আল্লাহর রহমত কামনা করে সৈয়দপুরে বিভিন্ন এলাকায় ইসতিসকার নামাজ আদায় সাতক্ষীরায় বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল চালক নিহত বৃষ্টির আশায় মু্ন্সীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ‘ইসতিসকার নামাজ’ আদায় ঐতিহ্যবাহী খুলনার ১৪৩তম জন্মদিন আজ নলছিটি কৃষি ব্যাংকে উৎসবমুখর পরিবেশে হালখাতা উদযাপন পাইকগাছা কৃষি ব্যাংকে হালখাতা অনুষ্ঠিত

কপিলমুনির গৃহবধু পিয়ার রহস্যমূলক আত্নহত্যার অন্তরালের রহস্য-১

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৩২ বার পঠিত
পাইকগাছার কপিলমুনিতে আত্নহত্যায় প্ররোচনার শিকার গৃহবধু পিয়া খাতুন-ফাইল ছবি।

দীপ্ত নিউজ ডেস্ক::

খুলনার পাইকগাছায় শিশু সন্তানকে খেলতে পাঠিয়ে গৃহবধু মা পিয়া খাতুনের আত্নহত্যার ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও প্রকৃত ঘটনার মোটিভ উদঘাটন হয়নি। আসলে পিয়া সেদিন আত্নহত্যা করেছিল নাকি তাকে হত্যা কিংবা আত্নহত্যায় প্ররোচিত করা হয়েছিল? এমন নানা প্রশ্নের ভীঁড়ে বিভিন্ন বিষয় বার বার সামনে আসছে। পরিবারের পক্ষে প্রথমত বিষয়টিকে নিছক আত্নহত্যা মনে করা হলেও পরে প্ররোচনার বিষয় সম্পর্কে নানা তথ্য-উপাথ্য ও প্রমানাদি সামনে আসতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশেও অভিযোগ করা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষে দাবি করা হচ্ছে।

বিশেষ করে একমাত্র শিশু সন্তানকে সামনে রেখে ঘরের দরজা-জানালা খোলা রেখে বসত ঘরের ফ্যানের সাথে নিজ ওড়না পেঁচিয়ে আত্নহত্যার ঘটনাটি চোখ এড়ায়নি কারো।

পিয়ার স্বামী রেন্ট-এ কার চালক মহিদুল ইসলাম মধু জানায়, ঘটনার দিন বেলা ১১ টা ১৫ মিনিটের দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে খুলনায় ট্রিপ নিয়ে বেরোয় সে। এরপর ১২ টা ১৫ মিনিটের দিকে পিয়া তার ব্যবহৃত ০১৯৯৯-৫৪১৩৩৪ নম্বরের ফোন দিয়ে স্বামী মধুকে ফোন দিয়ে তার অবস্থান ও বাড়ি ফেরার সময় জানতে চায়। এরপর আর তার সাথে কথা হয়নি মধুর। অথচ তার কল লিস্টে ১১ টা ২৮ মিনিট থেকে দুপুর ১ টা ২৯ মিনিট পর্যন্ত ২ ঘন্টায় মোট ৯০ মিনিট কথা বলা হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, ঘটনার আগে পিয়া তার এক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরেই নিজ কক্ষে ঢুকে আর বেরোয়নি সে। এরপর দুপুর ২ টার দিকে শ্বশুর ইদ্রিস আলী ভাত খাওয়ার জন্য বৌমা পিয়ার দ্বিতীয় তলার ঘরে গিয়ে তাকে খাটের উপর গলায় ওড়না পেঁচানো অর্ধ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। এরপর প্রতিবেশী সিরাজুলের স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও আহাদুলের স্ত্রী ফাতেমা বেগমসহ মধুর এক চাচাতো ভাই আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে পৌছে তাকে উদ্ধার করে ক্লিনিকে নেয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আব্দুস সালাম জানায়, তার গলায় আলতো করে ওড়না পেঁচানো ছিল কোন গিট ছিলনা। অর্থাৎ সেদিন আতœহত্যার জন্য সে গলায় রশি দেয়নি। এসময় ভিডিও কল চলমান ছিল। তবে সেদিকে খেয়াল না করে তাকে বাঁচাতে নীচে নামে ভ্যান ডাকতে।

মৃতের স্বমী মধু দাবি করেন, পিয়ার মোবাইলে সর্বশেষ ৫৯৯ টাকা রিচার্জ করা হয়েছে। তবে সে কখনো তাকে এত টাকা রিচার্জ না করায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয় তার। আর তখন বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে সুব্রত নামে একজনকে রিচার্জের দোকানি হিসেবে খুঁজে পায় মধু। তাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, আত্নহত্যার আগে যাওয়া ঐ প্রতিবেশী গত ১৮ ডিসেম্বর তার ফোনে ঐ ৫৯৯ টাকা রিচার্জ করে দেয়।

ঐ প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে ফেরার পর তার সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে আত্নহত্যা করে পিয়া এমনটি দাবি স্বামী মধুর। পিয়ার ধারণা ছিল, ঐ প্রতিবেশী তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসবে, তবে শেষ পর্যন্ত পিয়া আত্নহত্যা করলেও তাকে বাঁচাতে আসেনি সে। আর সেজন্যই আত্নহত্যার পর তার ঘরের দরজা-জানালা খোলা পাওয়া যায়। এরপর তাকে উদ্ধারের সময় প্রথমে মধুর এক ভাগ্নি রাশিদা পিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি হাতে নেয়। এরপর প্রতিবেশী জনৈকা কিশোরী তার কাছ থেকে ফোনটি জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। ধারণা করা হচ্ছে, ঐ কিশোরী কল লিষ্ট থেকে প্রতিবেশীর সাথে কথোপকথনের ভিডিও লিষ্ট মুছে ফেলে। আর এমনটি হলে নিশ্চই প্রতিবেশীর (প্ররোচনাকারী) সাথে ঐ কিশোরীর ভিডিও কল প্রসঙ্গে কথা হয়, আর ফাইলগুলি ডিলিট করতে বলা হয়। এরপর ফাইলগুলি ডিলিট করেই হয়তোবা ফোনটি ফিরিয়ে দেয় সে। সূত্র জানায়, পিয়ার ব্যবহৃত ফোনের লকড কোড পিয়া ছাড়া তার শিশু মেয়ে মাহিশা আক্তার মরিয়ম ও প্রতিবেশী কিশোরীই জানতো।

পিয়ার আত্নহত্যার পর সামনে আসা বিষয়গুলোর কোনোটি সত্য হলে প্রথম প্রশ্ন প্রতিবেশীর সাথে কি বিষয়ে কথা হয়েছিল তার। যার পর বাড়িতে ফিরে ভিডিও কলে ফোন দিয়ে আত্নহত্যা করে সে? আর কেনই বা তার গভীর বিশ্বাস ছিল যে, আত্নহত্যার খবরে তাকে বাঁচাতে আসবে সে? ঘটনার পর থেকে মধুর একটি স্বর্ণের চেইন ও কিছু গচ্ছিত টাকা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। ধারণা করা হচ্ছে, পিয়া মৃত্যুর আগে সেগুলো কাউকে দিয়ে থাকতে পারে। দিলেও সেই ব্যাক্তিটি কে? কিসের সম্পর্ক ছিল তার সাথে পিয়ার? তবে কি সে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিল? যদিও প্রতিবেশীর সাথে পিয়ার পরকীয়ার ব্যাপারে সরাসরি অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

এসব সূত্র ধরে তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজনদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বেরিয়ে আসতে পারে মূল আত্নহত্যার প্ররোচনা ঘটনার মূল রহস্য।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্নহত্যা করে উপজেলার কপিলমুনির কাশিমনগর গ্রামের রেন্ট-এ কার চালক মহিদুল ইসলাম মধুর স্ত্রী ও পার্শ্ববর্তী হরিদাশকাঠি গ্রামের মৃত আহাদ আলী মোড়লের মেয়ে পিয়া খাতুন (২৪)। ঐ দিন তার লাশ উদ্ধার করে সুরোতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের পর পরের দিন বিকেলে স্বামীর বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হয় তার। এ ঘটনায় প্রথমত কোন পরিবারের পক্ষে কোন প্রকার অভিযোগ না করায় থানায় একটি অপমৃত্যু দায়ের হয়।

এব্যাপারে পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

একই বিভাগের সকল খবর